Breaking News
Home / Breaking News / ভাংতি করতে গিয়ে ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা নিয়ে উদাও জামালপুর জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি

ভাংতি করতে গিয়ে ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা নিয়ে উদাও জামালপুর জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি

জামালপুর প্রতিনিধি:

জামালপুরে অগ্রণী ব্যাংকের টাকা নিয়ে অভিনব কায়দায় নয়-ছয় করার অভিযোগ উঠেছে, জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা সোমার বিরুদ্ধে । ব্যাংকে ১২ হাজার টাকা ভাংতি করতে গিয়ে, ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা নিয়ে চলে এসেছিলো জামালপুর জেলা যুব মহিলা লীগের এ নেত্রী।

গত ১৯ জুলাই দুপুরে শহরের তমালতলা মোড়ে অবস্থিত অগ্রণী ব্যাংকের জামালপুর শাখায় এই ঘটনা ঘটে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যাংকের একজন কর্মচারী জানান- ১৯ জুলাই দুপুরের দিকে ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টারে গিয়ে এক হাজার টাকার ১২টি নোট ভাংতি দিতে বলেন ফারহানা সোমা। এ সময় তার সাথে আরো একজন মেয়ে ছিলো। ব্যাংকের ক্যাশিয়ার ভুল করে তার সামনে ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা রাখলে সেটি নিয়ে চলে যান তিনি। এরপর বিকালের পরে ক্যাশে টাকার হিসাব না মিললে ক্যাশে দায়িত্বে থাকা ব্যাক্তি ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মুহাম্মদ হারুনুর রশিদকে বিষয়টি জানান।

এরপর তারা সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে ফারহানা সোমাকে টাকা নিয়ে যেতে দেখেন। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ফারহানা সোমাকে ফোন করেন। এরপর অতিরিক্ত ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিতে গড়িমসি করেন ফারহানা সোমা। সেই দিন রাতে ব্যাংকে লোক মারফত ৮৮ হাজার টাকা ফেরৎ পাঠান ফারহানা সোমা। টাকাগুলোর অধিকাংশই ৫০ ও ২০ টাকার নোট ছিলো।

এ বিষয় নিয়ে জেলা যুব মহিলা লীগের কয়েকজন নেত্রীর সাথে কথা বলে, জানা যায় ১৯ তারিখ বিকালে দলীয় একটি অনুষ্ঠান শেষে কর্মীরা জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে অবস্থান করে। এরপর ফারহানা সোমা একজন নেত্রীকে নিয়ে তার কাচারী পাড়ার বাসায় যান। সেখানে টাকার একটি ব্যাগ সেই নেত্রীকে দেন এবং কর্মীদের যাতায়াত ভাড়া দিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। সেই ব্যাগ নিয়ে আবারো শিল্পকলা একাডেমী প্রাঙ্গনে এসে কর্মীদের টাকা দিতে থাকে নেত্রীরা। এরপর ৩২হাজার টাকা দেয়া শেষে ব্যাগে অবশিষ্ট ১লাখ টাকা দেখে অবাক হয়ে যান তারা। তারা তখনই সেই টাকা ৪জনের মধ্যে ভাগ করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এমন সময়ই ব্যাংক থেকে ফোন পায় ফারহানা সোমা।
নেত্রীরা আরো জানান- ব্যাংকের ফোন পাওয়ার পরে বিষয়টি জানাতে শহরের পাথালিয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের একজন প্রথম সারির নেতার বাড়িতে যান ফারহানা সোমা। এরপর তাকে জানালে তিনি ৮৮হাজার টাকা তার লোক মারফত ব্যাংকে পাঠিয়ে দেন।

এদিকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অবশিষ্ট ৩২ হাজার টাকার জন্য ফারহানা সোমার সাথে যোগাযোগ করে সাড়া না পেলে বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগ এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের একজন নেতাকে জানান। এ বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সেই নেতার জামালপুরের বাড়িতে একটি বৈঠক হয়। পরে সেখান থেকে ব্যাংকে টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। এরপরও অবশিষ্ট ৩২ হাজার টাকা দিতে গড়িমসি করেন ফারহানা সোমা। সবশেষ বিষয়টি জামালপুর শহরসহ তার নির্বাচনী এলাকা জামালপুর সদর ও সরিষাবাড়ী উপজেলায় ছড়িয়ে পড়লে এবং সাংবাদিকরা ফারহানা সোমার কাছে জানতে চাইলে, অবস্থা বেগতিক দেখে ২৩ জুলাই সকালে ব্যাংকে গিয়ে টাকা দিয়ে আসেন অভিনয়ে ভরা চৌকুস এ নেত্রী।

এসব বিষয়ে জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা সোমা মোবাইল ফোনে বলেন-“যে টাকা নেয়া হয়েছে সেটি ফেরত দেয়া হয়েছে।”
কবে নাগাদ এই অর্থ ফেরত দেয়া হয়েছে এমন প্রশ্নে ফারহানা সোমা বলেন-“মনে হয় ঘটনার দিনই অর্থ ফেরত দেয়া হয়েছে।”

আর জামালপুর অগ্রণী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মুহাম্মদ হারুনুর রশিদ বলেন-“ব্যাংকের হিসাবে এক টাকা কম থাকলে ব্যাংক বন্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের হিসাব আমরা মিল করেছি।”

জামালপুর
২৩-০৭-২৩

Powered by themekiller.com