বিশেষ প্রতিবেদকঃ
অপপ্রচার আর নির্লজ্জ মিথ্যাচারের শুরুটা করেছিলেন ‘নামধারী’ বুদ্ধিজীবী ও ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী। খেই হারিয়ে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে ঘায়েল করতেই দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্বের প্রতীক, সুশৃঙ্খল ও পেশাদার বাহিনীটির প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদকে ‘টার্গেট’ করেছিলেন তিনি।
অবশ্য এর পেছনে ছিলো সুগভীর ষড়যন্ত্র। কিন্তু শেষতক বেগতিক পরিস্থিতিতে মিথ্যাচারের জন্য বিবৃতি দিয়ে দু:খ প্রকাশ ও ক্ষমাও চান জাফরুল্লাহ। এখানেই জাফরুল্লাহ থামলেও তাঁর দোসররা নানা কুটকৌশলে এগুতে থাকেন। এবার তাঁরা ‘কর্মযজ্ঞ’ শুরু করেন একাত্তুরে পরাজিত পাকি হায়েনাদের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র প্রেসক্রিপশনে।
গোটা বাহিনীতে ঐক্য ও সংহতি বিনষ্ট করতে সুযোগ সন্ধানী বিশেষ মহলটি সেনাবাহিনীর নামে বিভিন্ন ভুয়া ওয়েবসাইট ও ফেসবুক আইডি খুলে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর ষড়যন্ত্রের মিশন নেয়। আর সবকিছুই করা হয় যখন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শিয়রে।
এই নির্বাচনের সপ্তাহখানেক আগে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান অভিযোগ করে বলেছিলেন, বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্টের মিথ্যাচারের ভয়াবহতা এতই প্রকট হয়ে উঠেছে যে, তাদের মনগড়া, বিকৃত, বাস্তবতা বিবর্জিত রাজনীতির ময়দান ছেড়ে আমাদের জাতিগত গর্ব ও আত্মমর্যাদার স্মারক জাতীয় সেনাবাহিনী পর্যন্ত গড়িয়েছে।
আরো পড়ুন: ফেসবুকে সেনা প্রধানের নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট
তিনি ওই সময় আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, দেশপ্রেমিক ও সুশৃঙ্খল ও পেশাদার সশস্ত্র বাহিনী আজ বিশ্বশান্তি রক্ষায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বিশ্বসভায় বাংলাদেশের মর্যাদা উজ্জ্বল করেছে। এই অশুভ জোট সবসময় আমাদের আত্মমর্যাদার অনন্য স্মারক সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থেকেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, ক্ষমতার দিবা স্বপ্নে বিভোর ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্ট ধারণা করেছিলো, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার নামে ভুয়া (ফেক) ওয়েবসাইট, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, ইউটিউব চ্যানেল ব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য ও প্রোপাগান্ডা প্রচারের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর সুনাম ক্ষুন্ন করার পাশাপাশি দেশে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে তাঁরা ক্ষমতার মসনদ দখল করবে।
এসবের পাশাপাশি নির্বাচনের আগে তাঁরা বার বার ভোটের দিন সকাল থেকেই সারা দেশে ভোটকেন্দ্রগুলো দখল করারও ঘোষণা দিয়েছিলো। তাদের বিশ্বাস ছিলো, রক্তারক্তি ও সহিংসতার মাধ্যমে ভোট বানচাল করতে তাঁরা সক্ষম হবে।
কিন্তু নির্বাচনে সুনির্দিষ্ট দায়িত্বে থাকা দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ দেশের সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করেন নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার। নির্বাচনকে ঘিরে কঠিন এই অগ্নিপরীক্ষায় বিচক্ষণতা, সাহস ও সাফল্যের সঙ্গে তিনি উত্তীর্ণ হয়েছেন। দেশের আপামর মানুষের হৃদয় ও শ্রদ্ধা-সম্মান জয় করেছেন। শতভাগ সততার সঙ্গে লোভ-মোহের উর্ধ্বে ওঠে দেশের ও মানুষের কল্যাণে আদর্শের প্রশ্নে থেকেছেন অবিচল।
নির্বাচনের আগের দিন শনিবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর আজিমপুর কমিউনিটি সেন্টারে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সেনা প্রধান দৃঢ়তার সঙ্গে ভোটারদের জানিয়ে দেন, ‘আপনারা নির্ভয়ে ভোট দিতে যাবেন। আমরা আশাপাশেই থাকবো। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করবো, কেউ যেন কোনো অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে।’
দেশের স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম কোন রকম সহিংসতা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবেই অনুষ্ঠিত হয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সারা দেশে নির্বাচনী নিরাপত্তায় নিয়োজিত ৫০ হাজার সেনা সদস্য মোতায়েন থাকায় কোন রকম ভয়ভীতি ছাড়াই ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সাধারণ ভোটাররা।
ব্যাস। ভেস্তে যায় জোট-ঐক্যফ্রন্টের ভোট বানচাল বা ডাকাতির মহাপরিকল্পনা। মাথায় হাত পড়ে তাদের। ফলে আবারো এসব ষড়যন্ত্রকারীদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠেন, কর্মগুণে গোটা সেনাবাহিনীতে উজ্জ্বল ভাবমূর্তির অধিকারী, বিবেকবান মহিরুহ সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।
চক্রটি এবার নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলে সেনা প্রধানের নাম ও ছবি ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে মনগড়া তথ্য আপলোড করছে। তাদের ধারণা, এর মাধ্যমে নির্লোভ, সৎ, নিরংহকারী ও সফল সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদকে মানসিকভাবে দুর্বল করার পাশাপাশি বাহিনীটির সুনাম নষ্ট করা।
কিন্তু কঠিনকে জয় করে দেশের প্রয়োজনে গৌরবময় ভূমিকার স্বাক্ষর রাখা পরিশীলিত, মার্জিত বাগ্মিতায় এবং আপন কারিশ্মায় অনন্য সাধারণ জেনারেল আজিজ আহমেদ আপামর জনমানুষের ভালোবাসায় এগিয়ে যাবেন সব ষড়যন্ত্র ছিন্ন করে। বিবেকবান এই মানুষটি নিজের কর্মেই ইতিহাসে অমরত্ব পাবেন। যুগ যুগ বেঁচে থাকবেন সবার সম্মান-শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়।